ঢাকা, শনিবার   ২৬ অক্টোবর ২০২৪

যে কারণে বন্ধ হলো ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২১, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় স্থানীয়দের আপত্তির মুখে ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলার আয়োজন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা।

আগামী ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি ও কালীপূজা। এই উৎসব ঘিরে মেলার আয়োজন করা হয়। প্রায় ২৫০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার ৯টি কারণ উপস্থাপন করে মেলাটি বন্ধের দাবি জানানো হয়। অভিযোগপত্রে ১২ জন স্বাক্ষর করেছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, প্রতিবছর এই মেলায় মারামারি ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া জুয়া, মদ ও গাঁজার আড্ডা, নারী ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সামাজিক অবক্ষয় ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

এর আগে গত ১ এপ্রিল পৌরসভার পক্ষ থেকে ৮০ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যে আকবর হোসেন সরদার নামের আওয়ামী লীগের এক নেতাকে মেলা আয়োজনের ইজারা দেয়া হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে ইজারা বাতিলের দাবি জানায় স্থানীয়রা। পরে সেটি করতে ব্যর্থ হলে তারা ৯টি কারণ দেখিয়ে মেলা পুরোপুরি বন্ধ করতে কালকিনি পৌরসভা ও প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায়। পরে গত বৃহস্পতিবার প্রশাসন মেলাটি বন্ধের নির্দেশ দেয়।

কুন্ডুবাড়ি মেলা আয়োজনের ইজারাদার আকবর হোসেন সরদার বলেন, প্রায় আড়াই শ বছর ধরে কুন্ডুবাড়ির মেলা হয়ে আসছে। কেউ কোনো দিন কোনো প্রশ্ন তোলেনি। কিন্তু এবার প্রশাসনের কাছে ইসলামী আন্দোলনের নেতা ও আলেম সমাজের প্রতিনিধিরা কিছু অভিযোগ তুলে লিখিত দিয়েছেন। কিন্তু তারা (নেতারা) আমার কাছে এসে বলেছে, হিন্দুদের মেলায় মুসলমানরা যাবে না। তাই এখানে মেলা করা যাবে না। আমাকে তারা মেলা না করার জন্য নিষেধ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি পৌরসভা থেকে মেলার ইজারা নিয়ে কয়েক শ দোকানির কাছে জায়গা বরাদ্দ দিয়েছি। এসব দোকানি ঋণ করে মালামাল মেলায় বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এখন এই মেলা না হলে এসব দোকানি ঋণের জালে জড়িয়ে পড়বেন। আমারও আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতি হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, স্থানীয় কয়েকজন এই মেলার বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে স্থায়ী বন্ধ করার জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের ঝামেলা এড়াতে কালকিনি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন এবার মেলার আয়োজন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, মেলা সংস্কৃতির অংশ। আর যেহেতু কুন্ডুবাড়ির মেলাটি ঐতিহ্যবাহী, তাই মেলাটি বন্ধের পক্ষে নয় জেলা প্রশাসন। মেলাটি বন্ধ চেয়ে যারা আবেদন করেছে, তাদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসে সমাধান করার চেষ্টা করব।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি